কৃষি বিপণন অধিদপ্তরঃ
কৃষি খাতের গুরম্নতব অনুধাবন করে ১৯২৮ সনে প্রদত্ত রয়েল কমিশনের সুপারিশক্রমে ১৯৩৪ সন থেকে তৎকালনি ব্রিটিশ সরকার এই উপমহাদেশে কৃষি বিপণন সংক্রান্ত কার্যক্রম গ্রহন করে। কালের পরিক্রমায় তারই ধারাবাহিকতায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্থায়ী একটি অধিদপ্তর হিসাবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর এদেশের কৃষিতে অধিকতর মূল্য সংযোজন ও বাজার ব্যবস্থাপনায় কাজ করে যাচ্ছে।
ভিশনঃ
উৎপাদন, বিক্রেতা ও ভোক্তা সহায়ক কৃষি বিপণন ব্যবস্থা ও কৃষি ব্যবসা উন্নয়নের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখা। অর্থাৎ কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য এবং ভোক্তাদের যৌক্তিক মূল্যে পর্যাপ্ত পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে উন্নত বিপণন সেবা প্রদান করা।
মিশনঃ
কৃষি পণ্যের চাহিদা ও যোগান নিরম্নপণ, মজুদ ও মূল্য পরিস্থিতি বিশেস্নষণ ও অত্যাবশ্যকীয় কৃষি পণ্যের মূল্য ধারার আগাম প্রক্ষেপণ এবং এ বিষয়ক তথ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রচার করা। বজার অবকাঠামো জোরদারকরণ এবং কৃষি পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থায় সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলা। কৃষি পণ্যের গুনগতমান পরিবিক্ষণ করা। কৃষি বিপণন গ্রম্নপ/দল গঠন এবং উৎপাদক ও বিক্রেতার সাথে ভোক্তার সংযোগ স্থাপনে সহায়তা দান। কৃষি ব্যবসা ও কৃষি ভিত্তিক শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে কৃষি ও কৃষিজাত পণ্যের রপ্তানী বৃদ্ধিতে সহায়তা করা এবং কৃষক ও ব্যবসায়ীদের কৃষি পণ্যের গ্রেডিং, সটিং, প্যাকেজিং, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষনের প্রশিক্ষন ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে কৃষিপণ্যের মূল্য সংযোজন (Value addition)কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রাখা।
কি সেবা কিভাবে পাবেন:
১। বাজার তথ্য সম্পর্কিত সেবাঃ
=>কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ওয়েব সাইট www.dam.gov.bd এই তথ্য ভান্ডার থেকে আপনি অত্র জেলার দৈনিক বাজার দর সহ সারা দেশের বাজার দর ও অন্যান্য বাজার তথ্য জানতে পারবেন। কৃষক/ব্যবসায়ী কৃষি পণ্যের বাজার তথ্য জানান জন্য স্থানীয় জেলা মার্কেটিং অফিসে যোগাযোগ করে বাজার তথ্য জানতে পারবেন।
=>কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের নড়াইল জেলার নিয়ন্ত্রিত বাজার, নড়াইল সদর এর রুপগজ্ঞ বাজারে স্থাপিত তথ্য বোর্ড হতে আপনি দৈনিক বাজারদর সহ কৃষক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তার স্বার্থে প্রচারিত তথ্য জানতে পারবেন। এছাড়া খাদ্যে ক্ষতিকর ফরমালিন ও কার্বাইড এর প্রভাব, খাদ্যে ক্ষতিকর ফরমালিন চেনার উপায়, ফরমালিনের প্রভাব কমানোর উপায়, কার্বাইড দিয়ে পাকানো ফল চেনার উপায় এবং সাবধানতা অবলম্বন সংক্রান্ত তথ্য জানতে পারবেন। এ সংক্রান্ত লিপলেট প্রতি মাসে ৪০-৫০ টি বিভিন্ন বাজারে বিতরণ করা হয়।
=>কৃষকের মৌসুম ভিত্তিক পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির সহায়তার উদ্দেশ্যে স্থানীয় গ্রাম্য হাট বাজার থেকে পণ্য মূল্য সংগ্রহ করে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরে প্রদান করা হয়, যা কুষক ও ব্যবসায়ী মহলের সুবিধার্থে বাংলাদেশ ঢাকা বেতার থেকে সম্প্রচার করা হয়। এছাড়া জেলা ওযারী মৌসুমী ভিত্তিক বিভিন্ন কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচ ও মূল্য বিস্তৃতি সংক্রান্ত তথ্য জানতে পারবেন।
২। বাজার নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্তঃ
কৃষিপণ্য বাজার নিয়ন্ত্রণ আইনের আওতায় সকল প্রজ্ঞাপিত বাজারের কৃষিপণ্যের বাজার কারবারীদের নতুন লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়ন:
=> কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, জেলা মার্কেটিং অফিস নড়াইল, জেলার নিয়ন্ত্রিত বাজারে কৃষিপণ্যের বাজারকারবারীদের লাইসেন্স প্রদান করে থাকেন।
=>নিয়ন্ত্রিত বাজারে কৃষিপণ্যের বাজারকারবারীগণ লাইসেন্সের আবেদন এবং ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে সরকারী কোষাগারে টাকা জমা করে নবায়ন লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে ১-২ কর্ম দিবসের মধ্যে এবং নতুন লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে আবেদনের পর ২-৫ কর্ম দিবসের মধ্যে লাইসেন্স পেতে পারবেন।
মানসম্মত ওজন ও বাটখারা:
কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, জেলা মার্কেটিং অফিস নড়াইল জেলার নিয়ন্ত্রিত বাজারে বিভিন্ন ওজনের মানসম্মত ওজন ও বাটখারা সরবরাহ, মানসম্মত ওজন ও বাটখারা যাচাই ও বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন।
=>কৃষি বিপণন অধিদপ্তর নড়াইল জেলার নিয়ন্ত্রিত বাজার, নড়াইল সদর এর রুপগজ্ঞ বাজারে জেলা বাজার উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও রুপগজ্ঞ বাজার পরিচালনা কমিটির নিকট এক সেট মানসম্মত ওজন ও বাটখারা সরবরাহ করেছেন। যা দ্বারা কৃষক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তা সাধারণ বিনা খরচে তাদের ওজন যাচাই করতে পারবেন।
মার্কেট চার্জ নির্ধারণ:
কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, বাজার নিয়ন্ত্রণ আইন মোতাবেক জেলার নিয়ন্ত্রিত বাজারে মার্কেট চার্জ নির্ধারণ ও বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন। বিদ্যমান মার্কেট চার্জ বা আড়তদারী যেমন সকল প্রকার শাক-সব্জি শতকরা ৩%, আলু ২%, পিয়াজ ২%, রসুন ২%, আদা ২%, হলুদ ১%, কাঁচা মরিচ ২.৫%, শুকনা মরিচ ১.৫% সকল প্রকার মাছ (শুকনা ব্যতিত) ৪%, সকল প্রকার শুকনা মাছ ৩%, হাঁস-মুরগি (জীবিত) ৪%, ডিম (হাঁস-মুরগি) ২%, সকল প্রকার ফল ৪%, সকল প্রকার ধান ১.৫%, সকল প্রকার চাল ১%, সকল প্রকার গম ১.৫%, সকল প্রকার কলাই ১%, সকল প্রকার তৈলবীজ ১.৫%, আটা-ময়দা ১.৫%, সুপারী ১%, পান ৪% ।
=> জেলার নিয়ন্ত্রিত বাজারে তফসিলভূক্ত এ সকল কৃষিপণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রেতার নিকট হতে বাজারকারবারীগণ কর্তৃক আদায়যোগ্য, সরকার নির্ধারিত মার্কেট চার্জ বা বাজার মাশুল এর অতিরিক্ত গ্রহণ বা প্রদান করিলে এবং কৃষক বা বিক্রেতার নিকট হতে আদায় করিলে তা প্রমান এবং অভিযোগ দায়ের সাপেক্ষে ১-৫ কর্ম দিবসের মধ্যে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন। যা কৃষকের বিক্রিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য এবং ভোক্তার যৌক্তিক মূল্যের সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
৩। ফসল সংরক্ষণ/গুদাম সম্পর্কিত তথ্য/সেবা:
=> কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, নড়াইল কৃষকদের ফসলের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শস্যগুদাম ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। যেখানে কৃষকগণ মৌসুমে তাদের পণ্য বিক্রয় না করে গুদামে সংরক্ষণ করেন এবং সংরক্ষিত পণ্যের বাজার মূল্যের ৮০% ব্যাংক ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে আর্থিক প্রয়োজন মিটিয়ে থাকেন। গড় মৌসুমে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেলে কৃষকগণ তাদের পণ্য বিক্রি করে ব্যাংক ঋণ পরিশোধের পরও আর্থিক ভাবে লাভবান হয়ে থাকেন।
=>কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, নড়াইল কর্তৃক অত্র জেলায় ১। তুলারামপুর বাজার সংলগ্ন গুদাম:- গ্রামঃ তুলারামপুর, পোঃ তুলারামপুর বাজার, থানা+জেলা - নড়াইল। ২। গোবরা বাজার সংলগ্ন গুদাম:- গ্রামঃ গোবরা, পোঃ গোবরা বাজার, থানা+জেলা- নড়াইল। ৩। মাইজপাড়া বাজার সংলগ্ন গুদাম:- গ্রামঃ মাইজপাড়া, পোঃ মধ্যপলস্নী, থানা+জেলা - নড়াইল। ৪। এড়েন্দা বাজার সংলগ্ন গুদাম:- গ্রামঃ এড়েন্দা,পোঃ+থানা+জেলা- নড়াইল।
ফসল সংরক্ষেণের ধাপ সমূহঃ
=> প্রথমে কৃষক তাঁর ফসল (খাদ্য শস্য) সংরক্ষেণের জন্য স্থানীয় গুদাম কমিটি/গুদাম রক্ষক এর নিকট যোগাযোগ করে তাঁর ফসল গুদামের বস্তায় রশিদ গ্রহণের মাধ্যমে সংরক্ষণ করবেন।
=>এরপর উক্ত গুদাম থেকে/গুদাম সংশিস্নষ্ট ব্যাংক থেকে লোন ফর্ম সংগ্রহ ও ফর্মপূরণ করে গুদাম সংশিস্নষ্ট রাষ্ট্রয়াতব ব্যাংক থেকে কৃষক তাঁর পণ্যের বাজার মূল্যের ৮০% ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন।
=>ফসল ছাড়ানোর সময় কৃষকের সংরক্ষিত পণ্যের উপর মাসিক মণ প্রতি ৪.০০ (চার টাকা) ভাড়া পরিশোধ করে সিলিপ গ্রহণ করে সংশিস্নষ্ট ব্যাংকে বার্ষিক ১১% ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করে ফসল ছাড়াতে পারবেন।
কৃষি বিপণন কর্মকর্তা
জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তার কার্যালয়
কৃষি বিপণন অধিদপ্তর
নড়াইল।
টেলিফোন:-০২৪৭৭৭৭৪০৫৮
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস